দশ মিনিটের ব্ল্যাকআউটে টোকিও
প্রায় ছয় বছর পর ১০ মিনিটের জন্য বিদ্যুৎহীন ছিল বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ জাপানের রাজধানী টোকিও।
বুধবার বিকেলে অফিস ছুটির ঠিক আগে আগে এই ব্ল্যাকআউটে টোকিওর বড় একটি এলাকা কার্যত অচল হয়ে পড়ে; দুর্ভোগে পড়ে প্রায় ছয় লাখ বাসিন্দা।
বিদ্যুৎ না থাকায় বন্ধ হয়ে যায় ট্রেন চলাচল, আটকে যায় লিফট, ট্রাফিক বাতি না জ্বলায় রাস্তায় তৈরি হয় জট।
জাপান টাইমসের খবরে বলা হয়, নিইজা এলাকায় বিদ্যুতের একটি সাব স্টেশনে আগুন ধরে যাওয়ায় মিনাটো, চিয়োদা, শিনজুকুসহ টোকিওর ১১টি ওয়ার্ডের ৫ লাখ ৮০ হাজারের বেশি ভবনে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয় কর্তৃপক্ষ। তবে অধিকাংশ এলাকায় ১০ মিনিটের মধ্যে সরবরাহ শুরু করা সম্ভব হয়।
নাগরিকদের এই বিপত্তির জন্য দুঃখ প্রকাশ করে বিদ্যুৎ বিপর্যয়ের কারণ অনুসন্ধানে তদন্ত কমিটি গঠনের কথা জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
টোকিও ইলেকট্রিক পাওয়ার কোম্পানির একজন মুখপাত্র এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, সায়তমা প্রদেশের নিইজা এলাকায় ওই সাব স্টেশন অত্যন্ত সুরক্ষিত। এটাকে নাশকতার কোনো ঘটনা বলে তারা মনে করছেন না।
টেলিভিশনের খবরে দেখা যায়, নিইজা এলকার ওই সাব স্টেশন থেকে কালো ধোঁয়ার কুণ্ডলি উঠছে। স্থানীয় প্রশাসন বাসিন্দাদের জানালা বন্ধ রাখার অনুরোধ জানায়। ওই এলাকা দিয়ে যাওয়া একটি মহাসড়কে যান চলাচলও বন্ধ করে দেওয়া হয়।
এর আগে ২০১১ সালে সুনামির পর বিদ্যুৎ বিপর্যয়ের কবলে পড়েছিল জাপানের বড় একটি এলাকা। এর পর থেকে টোকিওতে বড় ধরনের বিদ্যুৎ বিভ্রাট ঘটেনি।
জাপানিদের জীবনযাত্রা অনেক বেশি মাত্রায় বিদ্যুতের ওপর নির্ভরশীল হওয়ায় স্বল্প সময়ের ব্ল্যাকআউটেই অনেক বড় জটিলতা তৈরি হয়। যোগাযোগের জন্য ট্রেন থেকে শুরু করে বাসার লিফট, এমনটি টয়লেটের সেন্সর নিয়ন্ত্রিত পানির কলও বিদ্যুৎ ছাড়া অচল।
টোকিওর মিনাতো এলাকার বাসিন্দা বাংলাদেশি তরুণ সরাফত হোসেন বুধবারের ব্ল্যাকআউটের অভিজ্ঞতা জানাতে গিয়ে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ওই সময় আমি ১০ তলা থেকে লিফটে করে নামছিলাম। হঠাৎ বিদ্যুত চলে যাওয়ায় লিফট বন্ধ হয়ে বেকায়দায় পড়ে গিয়েছিলাম। পরে বিল্ডিংয়ের নিজস্ব জেনারেটর চালু হলে লিফটও সচল হয়।”
শিবুয়া রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, বিদ্যুৎ বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর তাদের ১১টি লাইনের সব ট্রেন বন্ধ হয়ে যায়। বেশ কিছু ট্রেনের যাত্রা বিলম্বিত হয়।