জাপান সরকারের আর্থিক সহায়তা পাবেন বিদেশিরাও
জাপান সরকার করোনাভাইরাস সংক্রমণের মুখে সে দেশের সব নাগরিককে এক লাখ ইয়েন আর্থিক সাহায্য দেওয়ার কথা জানিয়েছিল আগেই। আজ শুক্রবার সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে ঘোষণা করেছেন, জাপানে বসবাসরত বিদেশি নাগরিকেরাও এই আর্থিক সাহায্য পাবেন। মূলত করোনার এই সময়ে আর্থিকভাবে অসচ্ছল পরিবার এবং ক্ষুদ্র ব্যবসা প্রতিষ্ঠানকে পরোক্ষভাবে সাহায্য করার অংশ হিসেবে এই নগদ অর্থ দেওয়া হচ্ছে।
জরুরি অবস্থার মধ্যে দোকান-পাট, পর্যটন সেবা ও অন্যান্য কিছু প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে গেছে। নিজেদের ব্যবসা আপাতত বন্ধ রেখেছেন অনেকে। ফলে এই সব প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত বিদেশিরা হঠাৎ করে অর্থকষ্টের মধ্যে পড়ে যেতে পারেন। প্রধানমন্ত্রী আবের আজকের ঘোষণায় তারা স্বস্তি পাবেন।
করোনাভাইরাস সংকটের মুখে কেনাকাটা পড়ে যাওয়ায় ক্ষুদ্র ব্যবসা, বিশেষ করে রেস্তোরাঁ ও খুচরা বিক্রির দোকানপাটকে সাহায্য করা হচ্ছে সরকারের নেওয়া এই পদক্ষেপের আরেকটি উদ্দেশ্য। সরকার ধারণা করছে বাড়তি এই অর্থ কেনাকাটা করায় লোকজনকে উৎসাহিত করবে।
জরুরি অবস্থা সারা দেশ জুড়ে সম্প্রসারিত করে নেওয়ার ঘোষণা দেওয়ার একদিন পর প্রধানমন্ত্রী আবে আজ সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন। তিনি বলেন, ভাইরাস সংক্রমণ সামাল দিতে হলে মানুষের একে অন্যের সংস্পর্শে আসা বন্ধ রাখাই যথেষ্ট নয়। করোনাভাইরাস সংক্রমণ আরও বেশি ছড়িয়ে পড়া বন্ধ করতে ঘরে থাকার আহ্বান তিনি। ভাইরাস সংক্রমণ যেন মফস্বল এলাকায় ছড়িয়ে না পড়ে তা নিশ্চিত করে নিতে মে মাসের প্রথম সপ্তাহে গোল্ডেন উইক নামে পরিচিত সময়ে নিজ শহরের বাইরে না যাওয়ার পরামর্শ দেন তিনি। জাপানিরা সাধারণত বছরের ওই সময়ে পাওয়া লম্বা ছুটি কাটাতে নিজেদের আদি নিবাসে আত্মীয়স্বজনদের কাছে ফিরে যায়।
আগামী মাসের ৬ তারিখে শেষ হতে যাওয়া জরুরি অবস্থার মেয়াদ বাড়ানো হবে কিনা, সাংবাদিকদের এই প্রশ্নের উত্তরে আবে বলেন, সবটাই নির্ভর করছে পরিস্থিতি নিয়ে বিশেষজ্ঞরা কী মতামত দেন তার ওপর। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থায় যুক্তরাষ্ট্রের অর্থায়ন বন্ধ করা নিয়ে করা আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, তহবিল বন্ধ করে দেওয়ার কোনো পরিকল্পনা জাপানের নেই। তবে তিনি মনে করেন সংস্থার সংস্কার প্রয়োজন।
এদিকে টোকিওতে আজ করোনাভাইরাস সংক্রমণের দৈনিক হিসাব ২০০ অতিক্রম করেছে। আজ এক সংবাদ সম্মেলনে টোকিওর গভর্নর ইয়ুরিকো কোইকে নতুন এই হিসাব প্রকাশ করে বলেন, যেকোনো মূল্যে রাজধানীর নাগরিক জীবন ও অর্থনীতি তিনি রক্ষা করতে চাইছেন। টোকিও মেট্রোপলিটন সরকার এর আগে মহামারির নেতিবাচক প্রভাব থেকে দেখা দেওয়া দুর্দশা লাঘব প্রচেষ্টায় সাহায্য করার জন্য ৩৫ হাজার ৭৪০ কোটি ইয়েনের অতিরিক্ত একটি বাজেট নির্ধারণ করে নিয়েছে।
মেট্রোপলিটন সরকারের কর্মকর্তারা বলছেন, আজকের রেকর্ড ২০১টি নতুন চিহ্নিত হওয়ায় টোকিওতে শনাক্তের সংখ্যা এখন দাঁড়িয়েছে ২,৭৯৬ জনে। অন্যদিকে সারা জাপানে আজ ৩১০টি নতুন সংক্রমণ শনাক্ত করা হয়। জাপানে মোট সংক্রমণের সংখ্যা ইতিমধ্যে ১০ হাজার ছাড়িয়ে গেছে।
জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে তাঁর সরকারি বাসভবনে সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন। টোকিও, ১৭ এপ্রিল।