এই শিক্ষা জাপানিরা কোথায় পায়?
সামাজিক শিক্ষা শুরু হয় কিন্ডারগার্টেন লেভেল থেকে। সর্বপ্রথম যে তিনটি শব্দ এদের শিখানো হয় তা হলো-
কননিচিওয়া (হ্যালো)– পরিচিত মানুষকে দেখা মাত্র হ্যালো বলবে।
আরিগাতোউ (ধন্যবাদ)– সমাজে বাস করতে হলে একে অপরকে উপকার করবে। তুমি যদি বিন্দুমাত্র কারো দ্বারা উপকৃত হও তাহলে ধন্যবাদ দিয়ে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করবে।
গোমেননাসাই (দুঃখিত)– মানুষ মাত্রই ভুল করবে এবং সেই ভুলের জন্য ক্ষমা চাইবে।
এগুলো যে শুধু মুখস্ত করে শিখানো হয় তা না। বাস্তবে শিক্ষকরা প্রো-এক্টিভলি সুযোগ পেলেই ব্যবহার করবেন এবং করিয়ে ছাড়বেন।
সমাজে এই তিনটি শব্দের গুরুত্ব কতো তা নিশ্চয়ই অনুধাবন করতে পারছেন। এই শিক্ষাটা এবং এর অনুশীলন ওরা বাল্যকাল থেকে করতে শিখে। আমাদের রাজনীতিবিদরা বাল্যকালটা যদি কোনো রকমে জাপানের কিন্ডারগার্টেনে কাটিয়ে আসতে পারতেন!
কিন্ডারগার্টেন থেকেই স্বনির্ভরতার ট্রেনিং দেয়া হয়। সমাজে মানুষ হিসেবে বসবাস করার জন্য যা দরকার– নিজের বই খাতা, খেলনা, বিছানা নিজে গোছানো, টয়লেট ব্যবহার, পরিষ্কার করা, নিজের খাবার নিজে খাওয়া, প্লেট গোছানো ইত্যাদি। প্রাইমারী স্কুল থেকে এরা নিজেরা দল বেঁধে স্কুলে যায়। দল ঠিক করে দেন স্কুল কর্তৃপক্ষ। ট্রাফিক আইন, বাস-ট্রেনে চড়ার নিয়ম-কানুন সবই শিখানো হয়। আপনার গাড়ি আছে, বাচ্চাকে স্কুলে দিয়ে আসবেন, উল্টা আপনাকে লজ্জা পেয়ে আসতে হবে!
ক্লাস সেভেন থেকে সাইকেল চালিয়ে স্কুলে যেতে পারবে। ক্লাসে কে ধনী, কে গরীব, কে প্রথম কে দ্বিতীয়- এসব বৈষম্য যেন তৈরি না হয় তার জন্য যথেষ্ট সতর্ক থাকে স্কুল কর্তৃপক্ষ। ক্লাসে রোল নং ১, মানে এই নয় যে একাডেমিক পারফরম্যান্স সবচেয়ে ভাল। রোল নং তৈরি হয় নামের বানানের ক্রমানুসারে।
বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতার সমস্ত আইটেমগুলো থাকে গ্রুপ পারফরম্যান্স দেখার জন্য– ইন্ডিভিজুয়েল নয়। সারা স্কুলের ছেলে মেয়েদের ভাগ করা হয় কয়েকটাটা গ্রুপে- সাদা দল, লাল দল, সবুজ দল ইত্যাদি। গ্রুপে কাজ করার ট্রেনিংটা পেয়ে যায় খেলাধুলা জাতীয় অ্যাক্টিভিটি থেকে। এই জন্যই হয়তো জাপানে বড় লিডার তৈরি হয়না কিন্তু গড়ে এরা সবার সেরা।
Tags: bangladesh, education system, japan, kids, Manners, modern education